বিশেষ প্রতিনিধি আব্দুল করিমঃ
নারায়ণগঞ্জ সোনারগাঁ মোগরাপাড়া ইউনিয়নে অবৈধ গ্যাস সংযোগ বিচ্ছিন্ন ও অস্বাস্থ্যকর পরিবেশে খাদ্য উৎপাদনের কারণে দুই প্রতিষ্ঠানকে নগদ অর্থ জরিমানা।
অবৈধ গ্যাস সংযোগ বিচ্ছিন্ন করতে দেশের সবচেয়ে বড় গ্যাস বিতরণ কোম্পানি তিতাস গ্যাস ট্রান্সমিশন অ্যান্ড ডিস্ট্রিবিউশন কোম্পানি লিমিটেড (তিতাস) জোরালো অভিযান পরিচালনা করছে।
তিতাস গ্যাসের সহ উপ-ব্যবস্থাপনা পরিচালক প্রকৌশলী সুরুজ আলমের উদ্বেগে , সোনারগাঁ সহকারি কমিশনার ভূমি ইব্রাহিম হোসেনের মাধ্যমে ও সোনারগাঁ থানার অপারেশন (ওসি ) মাহফুজ আলমের সহযোগিতায় এ অভিযান পরিচালনা করা হয়।
প্রতিদিন কোনো না কোনো এলাকায় অভিযান চালিয়ে অবৈধ গ্যাস সংযোগ বিচ্ছিন্ন করছে। অবৈধ গ্যাস ব্যবহারের দায়ে মামলা এবং জরিমানা আদায় করছে।
তিতাস সূত্রে জানা যায়, আগামী ১লা সেপ্টেম্বর থেকে ১০ই সেপ্টেম্বর পর্যন্ত সোনারগাঁও উপজেলা বিভিন্ন কোম্পানির ফ্যাক্টরি আবাসিক এলাকায় অভিযান জোরালোভাবে চালানো হবে।
অবৈধ গ্যাস সংযোগ বিচ্ছিন্নকরণ প্রসঙ্গে তিতাস গ্যাসের সহ উপ-ব্যবস্থাপনা পরিচালক প্রকৌশলী সুরুজ আলম গণমাধ্যম কর্মীদের বলেন, যতক্ষণ অবৈধ গ্যাস সংযোগ শূন্যের কোঠায় নামিয়ে আনতে না পারব ততক্ষণ অভিযান চলবে।
তিনি বলেন, জ্বালানি বিভাগের সিদ্ধান্ত এবং আমাদের অবস্থান কঠোর। অবৈধ গ্যাস ব্যবহারকারীদের বিরুদ্ধে অভিযান অব্যাহত থাকবে। শুধু অবৈধ গ্যাস সংযোগ নয় বকেয়া আদায়েও কঠোর অবস্থান নেওয়া হয়েছে। নিয়মের বাইরে বকেয়া থাকলে সংযোগ বিচ্ছিন্ন করে দেওয়া হবে। সহকারী মনিরুজ্জামান বলেন, অধিকাংশ এলাকায় গ্যাস দুর্ঘটনা ঘটছে অবৈধ গ্যাস সংযোগ থেকে। খুবই নিম্নমানের পাইপলাইন নিয়ে অবৈধ গ্যাস সংযোগ নিয়ে গ্যাস ব্যবহার করছে। ফলে কারণে-অকারণে বিভিন্ন জায়গায় দুর্ঘটনা ঘটছে। যার দায়ভার এসে পড়ছে তিতাস গ্যাসের ওপর।
গ্যাস বিতরণ কোম্পানিগুলোর আওতাধীন এলাকায় গত এক যুগে শত শত কিলোমিটার অবৈধ গ্যাস লাইন পড়েছে। বিভিন্ন সময় জ্বালানি বিভাগ এবং ছয়টি গ্যাস বিতরণ কোম্পানি এসব অবৈধ সংযোগ বিচ্ছিন্ন করতে অভিযান চালালেও দৃশ্যমান সফলতা অর্জন করতে পারেনি। একদিকে অবৈধ গ্যাস সংযোগ বিচ্ছিন্ন হয়েছে অন্যদিকে নতুন করে আবার অবৈধ গ্যাস সংযোগ নিয়েছে পাইপলাইনের গ্যাসের সুবিধা পেতে ইচ্ছুক সাধারণ মানুষ। সাধারণ মানুষের পাইপলাইনের গ্যাসের সুবিধা পাওয়ার আগ্রহকে কাজে লাগিয়ে সারাদেশে গ্যাস বিতরণ কোম্পানি এবং স্থানীয় প্রভাবশালীরা মিলে গড়ে তুলেছে অবৈধ গ্যাস সংযোগের সিন্ডিকেট। এই সিন্ডিকেট এতটা শক্তিশালী যে গ্যাস বিতরণ কোম্পানি এবং সরকারের সিদ্ধান্তকে চ্যালেঞ্জ করে অবৈধ গ্যাস সংযোগ দিয়েই যাচ্ছে। বিভিন্ন সূত্রে পাওয়া তথ্যমতে এসব অবৈধ গ্যাস সংযোগের সঙ্গে গ্যাস বিতরণ কোম্পানিগুলোর কর্মকর্তা কর্মচারী ছাড়াও স্থানীয় জনপ্রতিনিধি, সরকারদলীয় নেতাকর্মী, কোনো কোনো ক্ষেত্রে লোকাল প্রশাসনের কেউ কেউ সহযোগী।
এদিকে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক তিতাসের এক মহাব্যবস্থাপক (জিএম) আমাদের সময়কে বলেন, যেহেতু অধিকাংশ জায়গায় অবৈধ গ্যাস সংযোগের সঙ্গে প্রভাবশালীরা জড়িত থাকার কারণে বিচ্ছিন্নকারী টিম গেলেই বাধার সম্মুখীন হতে হয়। ফলে এসব ক্ষেত্রে লোকাল প্রশাসনের সার্বিক সহযোগিতা দরকার। কিন্তু অধিকাংশ ক্ষেত্রে তা পাওয়া যায় না। তিনি বলেন, দু-এক দিন আগে সোনারগাঁওয়ে অবৈধ গ্যাস সংযোগ বিচ্ছিন্ন করতে গিয়ে স্থানীয়দের হামলার শিকার হয় বিচ্ছিন্নকারী টিম। এ ঘটনায় সোনারগাঁও থানায় একটি মামলাও হয়েছে।
তারি ধারাবাহিকতায়, ৩০ শে আগস্ট দুপুরে সোনারগাঁ কলাপাতা রেস্টুরেন্ট ও মিঠাই কে অবৈধ গ্যাস সংযোগ সহ অস্বাস্থ্যকর পরিবেশে খাদ্য উৎপাদনের জন্য ও নিম্নমানের সামগ্রী ব্যবহারে ৫০ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়।
তাছাড়া আগামী ১৫ দিনের মধ্যে বৈধ সংযোগ সহ পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন তার জন্য হুঁশিয়ারি প্রদান করা হয়, অন্যথায় রেস্টুরেন্ট ও বেকারি সিলগালা করা হবে বলে হুঁশিয়ারি প্রদান করা হয়।
Leave a Reply