নিজস্ব প্রতিনিধিঃ কে এম রাজু
নারায়ণগঞ্জ জেলার সোনারগাঁ উপজেলার পৌরসভার বিভিন্ন এলাকায় মশার উপদ্রবে টিকেথাকা কঠিন হয়ে পড়েছে। ঘরের দরজা-জানালা বন্ধ করেও রেহাই মিলছে না মশার ভয়াল ছোবল থেকে, যার ফলে ছড়াচ্ছে ডেঙ্গু মেলেরিয়া সহো মশাবাহি নানান রোগ। মশার জ্বালায় শিশু থেকে বৃদ্ধ প্রত্যেক মানুষ অতিষ্ঠ হয়ে উঠেছে। পৌর এলাকার বিভিন্ন স্থানে জমে থাকা জলাবদ্ধতায় ময়লা-আবর্জনা দীর্ঘদিনেও পরিষ্কার না করায় এ অবস্থার সৃষ্টি হয়েছে বলে অভিযোগ পৌরবাসীর।
পৌরসভা কর্তৃপক্ষ ও পৌরবাসীর সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, ৯টি ওয়ার্ড নিয়ে সোনারগাঁ পৌরসভা গঠিত। লোকসংখ্যা প্রায় কয়েক লাখ। বিশাল এই জনগোষ্ঠীর পৌর এলাকাটিতে ময়লা ফেলার জন্য নেই কোন পর্যাপ্ত ডাস্টবিন, রাস্তার পানি নিষ্কাশনের জন্য নেই ড্রেনের সঠিক ব্যবস্থাপনা। একসময় খাল-বিল গুলো ছিলো প্রবাহমান। যেখানে নদীর পানি সাথে বিভিন্ন রকমের মাছ এসে খেলা করতো। কিন্তু দীর্ঘদিনের কোম্পানির দখল ও কোম্পানির ময়লা পানিতে দূষণে পুরো খাল-বিল এখন মৃতপ্রায় এবং জলাবদ্ধতায় পরিণত হয়েছে। এছাড়া নদী ভরাট ও দখলের ফলে এই খাল-বিলের মধ্যেই ময়লা-আবর্জনা ফেলছে পৌরবাসী। সেই সাথে সৃষ্টি হয়েছে ঝোপঝাড় জঙ্গল। পানিতে ময়লার স্তূপ জমে প্রচুর মশা জন্ম নিচ্ছে। শীতে বৃষ্টিপাত না হওয়ায় প্রাকৃতিক ভাবেও মশা নিধন হচ্ছে না। অন্যদিকে দীর্ঘদিন ধরে পৌরসভার মশা নিধন করছে না। ফলে বেড়ে গেছে মশার উপদ্রব।
পৌরবাসীর দাবি, আগে পৌরসভার উদ্যোগে বিভিন্ন এলাকায় মশক নিধক ওষুধ স্প্রে করা হতো। কিন্তু দুই থেকে চার বছর হলো পৌরসভা এ ধরনের কোনো উদ্যোগই নিচ্ছে না। খাল খনন ও ময়লা আবর্জনাও পরিষ্কার করা হচ্ছে না। ফলে মশা বেড়েই চলেছে।
সরেজমিনে গতকাল মঙ্গলবার সকালে পৌরসভার বিভিন্ন এলাকা ঘুরে দেখা যায়, পৌর এলাকায় অধিকাংশ মহল্লাতেই ছড়িয়ে আছে মেঘনা নদীর শাখা খাল-বিল। আবর্জনা ও দখলে মহল্লার মাঝ দিয়ে যাওয়া খালটিও যেন ডোবায় পরিণত হয়েছে। এসব নদী-নালার ওপর দিয়ে ঝাঁকে ঝাঁকে উড়ছে মশা।
পৌরসভার লাহাপাড়া মহল্লার জাহাঙ্গীর হোসেন বলেন, সন্ধ্যা নামার পর থেকেই ঘরে মশার উপদ্রব বেড়ে যাচ্ছে। ঘরের দরজা-জানালা বন্ধ রাখলেও মশা কমছে না।
পৌরসভার গোয়ালদী মহল্লার মেহেদী হাসান বলেন, এবার মশার উপদ্রব যেন খুব বেশি। মশার কামড়ে সন্ধ্যা থেকেই অতিষ্ঠ হতে হয়। কয়েল, ধোঁয়া কিছু দিয়েই কিছু হচ্ছে না।
বৈদ্যেরবাজার মহল্লার তাপস বলেন, শুধু রাতে না, দিনেও ঘর একটু অন্ধকার হলেই মশা কামড়াচ্ছে। ফলে অনেক সময় দিনেও মশারি ব্যবহার করতে হচ্ছে।
সোনারগাঁ পৌরসভার কনজারভেটিভ ইন্সপেক্টর (পরিচ্ছন্নতা কর্মকর্তা) বলেন, মশক নিধক ছিটানোর জন্য পৌরসভায় পর্যাপ্ত কোনো ফান্ড বরাদ্দ নেই। মাঝে মধ্যে পৌর তহবিল থেকে কিছু ওষুধ ছিটানো হয়। কিন্তু তাতে তেমন কাজ হয়নি। ফলে প্রায় দু’চার বছর ধরে কার্যক্রমটি বন্ধ রাখা হয়েছে। বরাদ্দ পেলে পুনরায় নিধক ছিটানো হবে।
Leave a Reply